অন্ধকারের শহর: একজন ব্যারিস্টারের গোপন জীবন-পর্ব ২: সত্যের ছায়া

 

🔹🔹🔹 অন্ধকারের শহর: একজন ব্যারিস্টারের গোপন জীবন


🔹🔹পর্ব ২: সত্যের ছায়া

Meta Description:
কবরস্থানে মৃত মানুষের শ্বাসের শব্দ শুনে ব্যারিস্টার শফিকের জীবন বদলে যায়।
কে ডেভিড মরগ্যান? সে কি জীবিত, নাকি কোনো ভয়ংকর সত্য লুকিয়ে আছে এই মামলার আড়ালে?


🔹 কবরস্থানের সেই রাত




বৃষ্টি আরও জোরে পড়ছে।
লন্ডনের কবরস্থানটি তখন ভিজে কাঁপছে বাতাসে।
শফিক টর্চের আলো নিভে যাওয়ার পরও দাঁড়িয়ে আছে,
মনে হচ্ছে যেন পুরো পৃথিবী তার ওপর ঝুঁকে আছে।

কবরের ভেতর থেকে যে শ্বাসের শব্দ এসেছিল, সেটি এখন নিস্তব্ধ।
শফিক সাহস করে মাটির ঢাকনা সরাতে গেল—
ঠিক তখনই পেছন থেকে আলো পড়ল।
একজন মানুষ দাঁড়িয়ে আছে ছাতার নিচে, কালো কোটে, মুখ দেখা যায় না।

“তুমি এসেছো। ভেবেছিলাম তুমি আসবে না,”
লোকটি বলল।
তার কণ্ঠ শান্ত, কিন্তু ঠান্ডা।

শফিক প্রশ্ন করল,

“তুমি কে?”

লোকটি হালকা হাসল—

“আমি সেই ব্যক্তি, যাকে তুমি আজ কোর্টে মৃত বলেছিলে।”

Read More:


🔹 জীবিত ডেভিড মরগ্যান?

শফিক হতবাক।
সে কি সত্যিই ডেভিড মরগ্যান?
নাকি কেউ তার রূপ ধরে অভিনয় করছে?

লোকটি এগিয়ে এসে বলল—

“তুমি সত্য জানতে চাও, তাই না?
তাহলে আমার সঙ্গে চলো, মি. রহমান।
কিন্তু সাবধান — একবার এই পথে পা রাখলে আর ফিরে আসা যায় না।”

শফিকের মনে ভয় আর কৌতূহল মিশে গেছে।
সে কিছু না বলেই লোকটার পিছু নিল।

তারা কবরস্থানের শেষ প্রান্তে পৌঁছাল,
যেখানে পুরনো একটি গেটের নিচে লেখা —
“Hudson’s Vault – 1879”


🔹 হাডসনের ভল্ট

তারা ভেতরে ঢুকতেই বাতাস থেমে গেল।
ভেতরে ছড়ানো পুরনো কাগজ, আইন নথি, আর দেয়ালে টাঙানো সাদা–কালো ছবি।
প্রতিটি ছবিতে এক নাম —
Barrister A. Hudson

ডেভিড মরগ্যান (বা যে লোকটি নিজেকে তার বলে দাবি করছে) বলল,

“এই মানুষটাই সব শুরু করেছিল।
হাডসন শুধু আইনজীবী ছিল না, সে ছিল ‘The Order’ নামের এক গোপন সংগঠনের সদস্য।”

শফিক অবাক হয়ে বলল,

“The Order?”

“হ্যাঁ,” লোকটি বলল,
“একটা গোপন সমাজ যারা আদালতের রায়, বিচার, এমনকি মৃত্যুও নিয়ন্ত্রণ করে।
এবং তুমি এখন সেই খেলায় ঢুকে গেছো, অজান্তেই।”


🔹 হাডসনের চিঠি

লোকটি একটি পুরনো খাম হাতে দিল।
তার ওপর লেখা—
“To whoever defends the truth.”

চিঠিতে ছিল তিনটি লাইন:

“আইন কখনো অন্ধ নয়।
অন্ধ শুধু সেই মানুষ, যে সত্যকে ভয় পায়।
তুমি যদি সত্যের পথে আসো, তোমার বিচার তোমাকেই করতে হবে।”

শফিকের বুক কেঁপে উঠল।
তার মনে হলো, যেন কেউ বহু বছর আগেই
আজকের ঘটনাগুলো লিখে রেখে গেছে।


🔹 ফ্ল্যাশব্যাক: ৫ বছর আগের রাত

রুকাইয়া — শফিকের জীবনের একমাত্র ভালোবাসা।
তারা দুজন একসঙ্গে লন্ডনে পড়াশোনা করত।
বাগদান হয়েছিল, কিন্তু একদিন হঠাৎ রুকাইয়া উধাও হয়ে যায়।
কেউ জানে না সে কোথায় গেল।

তবে এক বছর পর এক অনামী খাম এসেছিল শফিকের অফিসে,
ভেতরে ছিল কেবল একটি শব্দ— “Forgive me.”

সেই থেকেই শফিক আর কাউকে ভালোবাসেনি।
আজ সেই রুকাইয়ার ছবি আবার ফিরে এসেছে, এক মৃত মানুষের মামলায়।


🔹 সন্দেহ

শফিক ফিরে এল নিজের চেম্বারে।
রাত ২টা।
কফির কাপের ধোঁয়া উঠে মিলিয়ে যাচ্ছে বাতাসে।
ডেস্কের ওপর হাডসনের চিঠি আর ছবিটা রাখা।

সে নিজের মনে বলল,

“রুকাইয়া, তুমি কোথায়?
এই মামলার সঙ্গে তোমার সম্পর্ক কী?”

ঠিক তখনই কম্পিউটার স্ক্রিন নিজে থেকেই জ্বলে উঠল।
স্ক্রিনে ভেসে উঠল এক বাক্য:

“She is watching you.”

শফিক চমকে উঠল।
মনে হলো কেউ তার অফিসের ভেতরে ক্যামেরা বসিয়েছে।


🔹 অজানা বার্তা

সে দ্রুত সার্ভার লগ চেক করল।
একটি IP ট্রেস করল—
ঠিকানা: Dhaka, Bangladesh.

এটা কীভাবে সম্ভব?
সে তো লন্ডনে!
কেউ বাংলাদেশ থেকে তার সিস্টেম হ্যাক করেছে?

তখনই ফোন বাজল।
কণ্ঠটা এবার নারীকণ্ঠ।

“শফিক, ভয় পেয়ো না। আমি রুকাইয়া।”

শফিকের নিশ্বাস থেমে গেল।

“তুমি… তুমি বেঁচে আছো?”

“হ্যাঁ, কিন্তু আমি তোমার পাশে নেই।
আমি এমন এক জালে জড়িয়ে গেছি, যেখান থেকে কেউ বের হতে পারে না।”

“The Order?” — শফিকের প্রশ্ন।

ফোনের অপর প্রান্ত নীরব।
তারপর ভেসে এল একটিই শব্দ—

“সত্যের মূল্য রক্তে দিতে হয়…”
ফোন কেটে গেল।


🔹 তদন্ত

পরদিন সকালে শফিক গেল “Old Bailey Archives” এ —
লন্ডনের পুরনো আদালতের নথির ভাণ্ডার।
সে খুঁজতে লাগল A. Hudson-এর ফাইল।

এক ফাইল অফিসার বলল,

“আপনি ভাগ্যবান, স্যার। Hudson’s Vault কেসগুলো এখনো সংরক্ষিত।”

ফাইল খুলতেই চোখে পড়ল এক নথি—
একই চিঠি, একই লেখা:
“Forgive me.”

তার পাশে এক নারীর নাম—
Ruqaiya Hudson.

শফিকের মাথা ঝিমঝিম করে উঠল।
রুকাইয়া! তার প্রেমিকা হাডসনের বংশধর?

তাহলে কি এই পুরো মামলাটা তার নিজের জীবনের সঙ্গে যুক্ত?


🔹 আদালতের নতুন কেস

পরের দিন নতুন এক নোটিশ এল:
“Crown vs. Shafiq Rahman”

অভিযোগ — আদালতের নথি জালিয়াতি ও অবৈধ কেস হস্তক্ষেপ।
শফিক নিজের নাম পড়ে বুঝতে পারল—
এখন সে নিজেই অভিযুক্ত।

প্রমাণ?
তার ডেস্কে পাওয়া গেছে ডেভিড মরগ্যানের মৃত্যুর নথির নকল কপি!

এটা কে করল?
The Order?
নাকি রুকাইয়া নিজেই?


🔹 অদ্ভুত সাক্ষাৎ

রাতের লন্ডন আবার অন্ধকার।
শফিক কোর্ট থেকে বেরিয়ে টেমস নদীর পাড়ে হাঁটছিল।
হঠাৎ কেউ কাঁধে হাত রাখল।
সে ঘুরে দেখল —
রুকাইয়া!

সে একদম বদলে গেছে — চোখে ক্লান্তি, মুখে ভয়।

“শফিক, সময় নেই। তারা তোমাকে ব্যবহার করছে।
ডেভিড মরগ্যান বেঁচে নেই, কিন্তু তারা চায় তুমি বিশ্বাস করো সে বেঁচে আছে।”

“কেন?”

“কারণ তুমি একমাত্র ব্যক্তি, যে হাডসনের ফাইলগুলোতে প্রবেশ করতে পেরেছো।
তারা সেই সত্য লুকাতে চায়, যেটা পুরো আইনব্যবস্থাকে ধ্বংস করতে পারে।”

“তাহলে The Order আসলে কী?”

রুকাইয়া বলল,

“আইনের আড়ালে লুকানো এক গোপন আদালত।
যেখানে বিচার হয় মানুষের নয়— সত্যের।”

বলে রুকাইয়া অদৃশ্য হয়ে গেল ভিড়ের মধ্যে।


🔹 ক্লু দুই

শফিক ঘরে ফিরে এমাকে বলল সবকিছু।
এমা তখন শান্ত গলায় বলল,

“স্যার, আমার মনে হয় কেউ আপনাকে ‘Test’ করছে।”

“Test?”

“হ্যাঁ। আপনি কি সত্যিকারের ন্যায়বিচার চান,
নাকি কেবল পেশার নিয়মে কাজ করেন— তা যাচাই করা হচ্ছে।”

তার কথাটা মাথায় ঘুরতে থাকল।
তখনই শফিক লক্ষ্য করল,
হাডসনের চিঠির নিচে আরেকটি লেখা ফুটে উঠেছে:

“The truth lies beneath your name.”

সে কলম নিয়ে নিজের নামের অক্ষরগুলো আলাদা করল —
S H A F I Q
আর নিচে ছোট করে লেখা —
Q FILE


🔹 সত্যের দরজা খুলছে

সে ডেস্কের ড্রয়ার খুলে দেখল—
“Q FILE” নামের একটি ফোল্ডার রাখা।
এটা সে কখনো দেখেনি!
ভেতরে একগুচ্ছ ছবি, প্রতিটি ছবিতে আদালতের বিচারক, রাজনীতিক, এবং নামি ব্যবসায়ীর ছবি।
সবাই একই জায়গায়— এক গোপন সভায়!

নিচে লেখা:
“The Order – Annual Assembly, 2015”

তার ভেতর থেকে ঠান্ডা ঘাম বের হতে লাগল।
এরা সবাই আজও সক্রিয়।
এবং তারা এখন তার পেছনে।


🔹 শেষ দৃশ্য

রাত তিনটা।
বাতি নিভে গেছে।
বাইরে সাইরেন বাজছে।
দরজায় কড়া নাড়ার শব্দ—
“Open up! Police!”

শফিক বুঝল,
এখন সে শুধু অভিযুক্ত নয়,
বরং সত্যের সাক্ষী।

সে শেষবারের মতো ডেস্কে হাডসনের চিঠি রাখল,
আর লিখল—

“যদি আমি বেঁচে না ফিরি,
জানবে — সত্য এখনো বেঁচে আছে।”

দরজা ভেঙে পুলিশ ঢোকার আগেই
শফিক জানালা দিয়ে ঝাঁপ দিল
অন্ধকার টেমস নদীর দিকে।

জল ছিটকে উঠল,
আর শহরটা আবার নীরব হয়ে গেল...


🔹 চলবে... (পর্ব ৩: অন্ধকারের মুখোমুখি)


🔹 Call To Action (CTA)

🔹 আপনি কী মনে করেন —
শফিক কি বেঁচে আছে?
রুকাইয়া কি আসলেই তার পাশে, নাকি The Order-এর সদস্য?
আপনার মতামত কমেন্টে লিখে জানান,
আর পর্ব ৩ পড়তে সাবস্ক্রাইব করুন 🔔


🔹 SEO Keywords:

বাংলা থ্রিলার গল্প, রহস্য গল্প, অন্ধকারের শহর, ব্যারিস্টার গল্প, দ্য অর্ডার, বাংলা সিরিজ স্টোরি, মিস্ট্রি গল্প, মানসিক থ্রিলার






إرسال تعليق (0)
أحدث أقدم