পল্লীকবি জসীম উদ্দীন: জীবন ও সাহিত্যের মর্মমূলে
![]() |
আরো পড়ুন : |
🔹 ভূমিকা
বাংলা সাহিত্যের মাটি ও মানুষের কবি জসীম উদ্দীন (১৯০৩-১৯৭৬)। "পল্লীকবি" অভিধায় ভূষিত এই কথাশিল্পী তাঁর লেখনীতে গ্রামীণ বাংলার রূপ-রস-গন্ধ, কৃষকের শ্রমজীবন, লোকায়ত বিশ্বাস এবং প্রকৃতির সাথে মানুষের নিবিড় সম্পর্ককে তুলে এনেছেন অনবদ্য শব্দচিত্রে। তাঁর সাহিত্যকর্ম বাংলার সাংস্কৃতিক ইতিহাসের এক জীবন্ত দলিল।
🔹 শৈশব ও শিক্ষা
ফরিদপুরের তাম্বুলখানা গ্রামে ১৯০৩ সালের ১ জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন জসীম উদ্দীন। পিতা আনসার উদ্দিন মোল্লার স্কুলশিক্ষকের পেশা এবং মাতা আমিনা খাতুনের গৃহস্থালির সংস্পর্শে গ্রামজীবনের সরলতা তাঁর রক্তে মিশে যায়। ফরিদপুর রাজেন্দ্র কলেজ ও পরে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় স্নাতকোত্তর শেষে তিনি শিক্ষকতা শুরু করেন।
🔹 সাহিত্যজীবনের সূচনা
১৯২৯ সালে কলকাতায় অনুষ্ঠিত এক সাহিত্য সম্মেলনে "কবর" কবিতাটি পাঠ করলে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সহ অনেক কবি সাহিত্যিক মুগ্ধ হন। এটি পরবর্তীতে তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ রাখালী (১৯২৭)-তে স্থান পায়।
🔹 উল্লেখযোগ্য রচনাবলি
- কাব্য: নকশী কাঁথার মাঠ, সোজন বাদিয়ার ঘাট, বালুচর
- গদ্য: বেদের মেয়ে, হাসু
- আত্মজীবনী: যাদের দেখেছি
🔹 সাহিত্যিক বৈশিষ্ট্য
- লোকজ উপাদান: পল্লিগীতির ছন্দ, ঝাড়ু-বাউলের সুর, মৈমনসিংহ গীতিকার প্রভাব।
- বিষয়বস্তু: কৃষকের দুঃখ-সুখ, নারীজীবনের সংগ্রাম, প্রকৃতির সাথে আধ্যাত্মিক যোগ।
- ভাষাশৈলী: সহজ-সরল কথ্যরীতি, মাটির গন্ধমাখা উপমা।
🔹 আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি
নকশী কাঁথার মাঠ ইংরেজি, রুশসহ বহু ভাষায় অনূদিত হয়েছে। ১৯৭৬ সালে তিনি বাংলাদেশের প্রথম একুশে পদক লাভ করেন।
🔹 মৃত্যু ও উত্তরাধিকার
১৯৭৬ সালের ১৪ মার্চ ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। ফরিদপুরের অম্বিকাপুরে তাঁকে সমাহিত করা হয়। আজও তাঁর "আমার সোনার ময়না পাখি" বা "কবর" কবিতা বাংলার মানুষের হৃদয়ে অনুরণিত হয়।
![]() |
আরো পড়ুন : |
🔹 উপসংহার
জসীম উদ্দীনের সাহিত্য কেবল কবিতার স্তবক নয়—এটি বাংলার গ্রামীণ সভ্যতার এক মহাকাব্যিক আখ্যান। তাঁর রচনা আমাদের শিকড়ের সন্ধান দেয়, প্রেরণা জোগায় মাটি ও মানুষের অকৃত্রিম ভালোবাসায়।
🔹 লেখক: এস.এম.আলম রশীদ
🔹 প্রকাশকাল: জুন, ০৯, ২০২৫
🔹 ট্যাগ: #বাংলা_সাহিত্য #পল্লীকবি #জসীম_উদ্দীন #কবিতা
📢 আপনার মতামত জানান:
পল্লীকবি জসীম উদ্দীনের কোন গুণাবলি আপনাকে সবচেয়ে বেশি অনুপ্রাণিত করে? নিচে কমেন্ট করুন ও পোস্টটি শেয়ার করুন।